অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার কৌশল, অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম

আমাদের জীবনে সবাইকেই কোন না কোন সময় বক্তৃতা করতে হয়। হোক তা ছোট বড় অনুষ্ঠানের মঞ্চে কিংবা ঘরোয়া অনুষ্ঠানে, কিছু বলতে হয়। নানান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে হয়। এযাবৎ আপনার উপস্থিত বক্তৃতা তেমন কোন পর্যায়েই পড়ে নি? কেউ শুনতে চায় না? তার অনেক কারন থাকতে পারে। প্রথমত আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন কথা অনেক বলতে পারেন। উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম না মেনে শুরু করে দেন অনেকেই। কিন্তু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম কিংবা অনুশীলন না থাকায় কিছু সময় তাঁদের হাঁটু সমেত কেঁপে যায়। অথচ দেখুন অনেকেই আছেন এত সুন্দর করে বীর দর্পে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছেন মঞ্চ কাঁপিয়ে।

আসুন আজ আলাপ করে দেখি কিভাবে আপনিও কোন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে পারেন। মঞ্চ কাঁপানো আমাদের টার্গেট নয়। আজ আমাদের টার্গেট হচ্ছে কিভাবে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করলে শ্রোতা বা দর্শক শুনতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন? আপনি এই লেখাটাও পড়ে দেখতে পারেন, কিভাবে সুন্দর করে কথা বলতে হয়

কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান

লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার আগে কয়েকটি বিষয়ে নজর দিন

বক্তৃতা লিখে নিতে পারেন। যদি দুই তিন মিনিট সময়ও পান সেসময়ে একটি বক্তৃতা লিখে নিতে পারেন। বক্তৃতা লেখার নিয়ম জানা আবশ্যিক নয়।

মুখের কয়েকটি ব্যায়াম করে নিতে পারেন। যেমন জিহবা কে উপরের মাড়ির সামনের দাঁতের সাথে স্পর্শ করিয়ে বলুন- লা লা লা লা, এভাবে অন্তত বিশ বার।

দুই ঠোঁটের মধ্যে একসাথে একটা ভাইব্রেশন তৈরী করুন।  বিস্তারিত দেখার জন্য লেখার নিচে একটি ভিডিও দেয়া হলো।

এছাড়াও আপনি দুই ঠোঁটের সমান স্পর্শ হয় এমন উচ্ছারন যেমন ব ব ভ ভ বা বা , ভা ভা। উচ্ছারন করতে পারেন। এসব শব্দ আপনাকে কিছুটা হলেও উচ্ছস্বরে করা উচিৎ। এতে আপনার মুখের জড়তা চলে যাবে। আপনি কথা বলার সময় তেমন কোন বাধা হবে না।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম- অডিয়েন্সের মনোযোগ আকর্ষন করুন

কোন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছেন তা মনে রাখুনঃ উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম হচ্ছে আপনি কোন ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন তাতে কারা কারা উপস্থিত থাকছে সেদিকে খেয়াল রাখা। বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তৃতা আর রাজনৈতিক বক্তৃতার নমুনা কিংবা স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতা একরকম নয়। ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করতে হয়। বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম খুব বেশি জটিল নয়।

অডিয়েন্স এর দিকে তাকানঃ আপনি বক্তৃতা করার সময় দর্শক বা অডিয়েন্স এর কথা ভাবুন। তাদের দিকে তাকান। তারা সবাই আপনার দিকে তাকাচ্ছে না এটা সত্যি। যে আপনার দিকে তাকাচ্ছে আপনি তার বা তাদের দিকে তাকান। অডিয়েন্স আরো বেশি আগ্রহী হয়ে আপনাকে শুনবে।  অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে এসেছেন মানেই হচ্ছে অডিয়েন্স কে আনন্দ বা অন্য যে কোন দরকারী তথ্য দিতে এসেছেন। তাদের পর্যবেক্ষন না করলে আপনার কাজ সার্থক হবে না। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম কানুন আরো বেশি বেশি অনুশীলন করা উচিৎ।

শব্দ বাক্য এবং প্রকাশের দিকে নজর দিনঃ সব কথা সমান স্বরে বলতে হয় না। যেমন চিৎকার আস্তে দিলে হবে না। সেটা আর্তনাদ হলে তার শব্দ টা ভিন্ন হবে। একেক কথা একেক ধরনের শব্দে বলতে হয়। কোনটা মধুর স্বরে কোনটা তীব্র কিংবা ঝাঁজালো হতে পারে। যেমন আমরা মানুষকে সাহায্য করতে চাই, কথাটা খুব নিম্ন স্বরে যেমন বলা যায় তেমনি উচ্ছস্বরে দ্রুত বেগেও বলা যায়। ঝাঁজালো স্বরেও বলা যায়। তিনটি ভিন্ন মাত্রায় এর অর্থ বা ভাব ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। শ্রোতা তার ভিন্ন ভিন্ন ভাব কিংবা গুরুত্ব খুঁজে পায়। তাই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম মেনে এদিকে নজর দিতে হবে।

মাঝে মধ্যে নীরবতার অনুশীলন করুনঃ কথা বলার এক পর্যায়ে কিছুক্ষন নীরব হয়ে যেতে পারেন। এতে অডিয়েন্স, যারা এতক্ষন আপনাকে দেখছে না তারাও মাথা তুলে তাকাবে। মনোযোগ ফিরে আসবে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন আর না ই দেন, আপনি যদি ৩ থেকে ৫/৭ সেকেন্ডের একটি সুন্দর নীরবতা অডিয়েন্স কে উপহার দিতে পারেন। সেটা অনেক বেশি স্মরনীয় হতে পারে। তবে নীরবতা অনুশীলন করতে হবে। বক্তৃতা দেওয়ার কৌশল হিসেবে নিতে পারেন।

উপস্থিত বক্তৃতার বিষয় নির্ধারণ করুন- কিছু কথা বক্তৃতা থেকে পরিহার করুনঃ

অবশ্যই কিছু বিষয়ে কথা বলা পরিহার করতে হবে। মানুষ সাধারনত কিছু বিষয়ে শুনতে চায় না। যেমন –

১) গল্প করা, বেশি গল্প কেউই শুনতে চায় না। এটা সময় অপচয়।

২) নেগেটিভ কথা বলা, পজিটিভ কথা সবাই শুনতে চায়।

৩) এক্সকিউজ বা অযুহাত, কেউ কখনোই অযুহাত শুনতে প্রস্তুত নয়।

৪) কমপ্লেইনিং বা অভিযোগ, এই বিষয়ে কেউই শুনতে চায় না।

৫) মিথ্যা বলা, এটা অনুচিত। মানুষ শুনতে চাইলেও এর অসুবিধা অনেক।

৬) কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা। এ ক্ষেত্রে আপনার কথা কেউই শুনতে চাইবে না।

বক্তৃতার বিষয়ের প্রতি মনোযোগ রাখুন। স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতা দিতে গিয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বক্তৃতা দিয়ে দেয়া বোকামী। আন্তরিক হয়ে বিষয়ের দিকে নজর দিন। আপনার মনে আসলেই সব বলে দিবেন না।

আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলুনঃ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম মানুন

আপনি বলবেন বা বলছেন তা সবাই শুনবে কারন আপনার উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে কিছু না কিছু পরিবর্তন করা। আপনি পরিবর্তন চাচ্ছেন। সেই বিষয়েই কথা বলছেন যার গভীরে আপনি যেতে পারেন। গভীরে যেতে না পারলেও অসুবিধা নেই, বক্তব্যের শেষে আপনি যতটুকু লিমিট জানেন তার সীমা নির্ধারন করুন। মানুষ সততা এবং একনিষ্ঠতার পৃষ্ঠপোষক।

যত বেশি পারেন অনুশীলন করুনঃ

আপনার অনুশীলনই আপনাকে দিতে পারে সর্বশ্রেষ্ঠ শব্দ বা কথা প্রয়োগের সুযোগ। একদিনে কিছুই হয় না। নিয়মিত প্র্যাকটিস করলে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার দক্ষতা বাড়ে।  অডিয়েন্স না পেলে, আয়নার সামনেও বক্তৃতা করতে পারেন। মানুষ নিজেকে নিজে বক্তা হিসেবে মূল্যায়ন করতে পারলে অন্যরাও মূল্যায়ন করবে বলে আশা করা যায়। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম অনুশীলন খুব বেশি কঠিন না। এজন্য বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন সবাইকে জানিয়ে দিন যে আপনি যেকোন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম কানুন অনুশীলন করতে চান। তারা যেন সুযোগ করে দেন।

নিজের সাথে লিখিত বক্তৃতা রাখুন

বক্তৃতার নমুনা হিসেবে বা তথ্য নথি হিসেবে কিছু লিখিত বক্তব্য নিজের কাছে সবসময় রাখুন। বক্তৃতা লেখার নিয়ম সেরকম কোথাও খুঁজে দেখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তবে আপনি বিখ্যাত বা সেরা বক্তাদের অনুসরন করতে পারেন। কখনো যদি বক্তৃতা দেয়ার সময় নিজেকে হারিয়ে ফেলেন তখন এসব লিখিত বক্তৃতা আপনাকে সাহায্য করবে।

ভিডিওটি দেখুন, আমার খুব প্রিয় এটি- জুলিয়ান খুব ভাল মানের বক্তা। তার ব্যক্তিত্ব অনেক সুন্দর আর অনুসরন করার মত।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় হচ্ছে

নিবন্ধন

লগিন করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আমাদের সম্পর্কে

কিভাবে ইনফো - Kivabe Info

কিভাবে ডট ইনফো একটি বাংলা তথ্য শেয়ারিং সাইট। এএখানে আপনি নিজে যেমন জানতে পারবেন তেমনি চাইলে সবাইকে জানাতেও পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া

যোগাযোগের জন্য

© কিভাবে ইনফো - Kivabe Info 2013-2022

Developed by: Behostweb.com

আপনি আমাদের সাথে একমত হয়ে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন, এর মানে আপনি আমাদের কুঁকি পলিসি গ্রহন করেছেন। পড়ুন প্রাইভেসি পলিসি . সব কুঁকি মেনে নিন