কিভাবে প্রেম করবেন, কেন করবেন আর কেন করবেন না এ নিয়ে লিখতে গিয়ে আর অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমার ব্যক্তিগত জীবনে একটি বাস্তব প্রেমে পড়া হয়ে গেলো। প্রেম নিয়ে অনেক ভেবেছি। অনেকগুলো দিক থেকেই ভেবেছি। দেখেছি অনেকের প্রেম। শেষে প্রেম নিয়ে লিখেছি যখন তখন অনেকেই দেখলাম তা পড়েছেন। এর পাঠকপ্রিয়তা দেখে ভাল লাগছে। আরো দেখলাম আমাকে অনেকেই ইন্টারনেটে প্রেম বিশেষজ্ঞও বলছেন! 🙂 কিন্তু কখনো কি আপনারা ভেবেছিলেন প্রেম আসলেই টিকে থাকে কিসের উপর? একমাত্র উত্তর হচ্ছে রেস্পেক্ট অথবা সম্মান এর উপর। কিভাবে বুঝবেন যাকে ভালবাসেন তিনি আপনাকে রেস্পেক্ট করেন কি-না? বুঝতে পারাটা অনেক কঠিন কিন্তু খুব জরুরী। আজ আমি আপনাদেরকে এই রেস্পেক্ট বা সম্মান করা বিষয়ে কিছু ধারনা দেবার চেষ্টা করব।
আপনারা অনেকেই হয়ত খেয়াল করেছেন যারা অনেক দীর্ঘ সময় ধরে একটি সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের গোপন রহস্যটা কী! অনেকেই বিভিন্ন সময়ে নিজেদের ব্যাপারে মুখ খুলতে চান না, তবে যারা খুলেছেন সবাই এককথায় বলেছেন পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ আর রেস্পেক্ট সেই সাথে উৎসর্গ বা ডেডিকেটেড আচরন। পাশাপাশি যখন দু’টি জীবন চলতে শুরু করে তখন অনেক পরিস্থিতি এসে ধরা দেয়, তালগোল পাকায়, হতাশায় ফেলে। এই সময় গুলোতে আপনার সংগী আপনাকে কিভাবে দেখছেন কি করছেন অথবা তার দৃষ্টিভংগী আপনার দিকে কেমন তাদের একটা সংগ্রহই আপনাকে জানতে সাহায্য করবে তিনি আপনাকে রেস্পেক্ট করে কি-না! আমি কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করছি।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
আপনার কথা তিনি শোনেন কি নাঃ খুব ভাল করে দেখুন তো আপনার কথা তিনি শোনেন নাকি কখনোই শোনেন না। যদি তিনি আপনার কথা কানের ভিতরে প্রবেশ করাতে পচন্দই না করেন তবে বুঝবেন আপনাকে অবহেলা করছেন। কোন রকমের সম্মান তার কাছ থেকে আশা করাই যায় না। কথা শোনাটা জরুরী। আপনি যদি আপনার সংগীকে সম্মান করেন বা রেস্পেক্ট করেন তবে তার কথাও আপনার শোনা উচিৎ । কথা শুনছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য কথার মাঝ পথে প্রশ্ন রাখতে পারেন। তাকে কিছু বলার সুযোগ দিতে পারেন। যদি তার প্রতিউত্তরে কোন আগ্রহ প্রকাশিত না হয় তবে বুঝবেন তিনি আপনার কথা মনপ্রান দিয়ে শুনছেন না। হয়ত কিছু বলতে পারছেন না বলেই শুনছেন। বাস্তবিক ব্যপার হলো কথা শোনার মাধ্যমে বুঝতে পারা যায় সত্যি তিনি আপনাকে কতটা সম্মান করেন। কতটা আন্তরিক। যারা সংগীকে রেস্পেক্ট করেন তাদের বেলায় কথার জবাব মেলে খুব চিন্তাশীল। আলাপ অনেক সুন্দর, দু’জনেই আলাপে তৃপ্ত হন মানসিকভাবে।
আপনাকে নিয়ে তিনি গর্বিত কি নাঃ আপনি যা ই হয়ে থাকুন না কেন, আপনার সংগী আপনাকে নিয়ে গর্ব করেন কি না সেটা জানা জরুরী। সংগীকে সম্মান করার জন্য তার ভাল দিক গুলো পর্যালোচনা করে তাকে নিয়ে গর্ব করা উচিত। এর প্রকাশ হবে যখন কোন সভা বা গ্রুফ আলাপে সংগীকে নিয়ে কথা হয় তখন আকারে ইংগীতে বোঝানো যে সে-ই একমাত্র মানুষ যার সাথে ভালভাবে বসবাস করা যায়। অথবা অনেক সময় কথায় কথায় বলে বসবেন, আমার সংগীই সেরা! এর প্রকাশ খুব দ্রুত হয়। এটা সম্মানবোধ থেকেই আসে। একে অন্যকে অনেকের মাঝে তুলে ধরতেই এই গর্ববোধ। সংগীকে রেস্পেক্ট করার এটাও অন্যতম প্রকাশ।
ঝগড়া করার সময় যৌক্তিক থাকাঃ মানুষের মতবিরোধীতা থাকেই। সংগীর সাথে এরকম পরিস্থিতি তৈরী হওয়া অনেক বেশি স্বাভাবিক।তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে কতটা যৌক্তিক সেই ঝগড়া? আপনি রেগে গেলে আপনার সংগী কিভাবে দেখছেন সেই অবস্থাকে? আবার তিনি রেগে গেলে আপনি কিভাবে দেখছেন? রাগ নিয়ন্ত্রনে কে কতটা ভূমিকা নিচ্ছেন? কতটা যৌক্তিক ছিলো আপনাদের ঝগড়া? আপনাদের মধ্যেই একে অন্যের ভুল কি বুঝতে পেরেছেন? কিংবা আপনি না বুঝলেও তিনি আপনাকে কি বুঝিয়ে দিচ্ছেন? এসব অবস্থান থেকেই আপনি বুঝতে পারেন সেই মানুষটি আপনাকে কতটা রেস্পেক্ট করেন। আপনি তাকে কতটা রেস্পেক্ট করেন তাও প্রমানিত হয় এই পরিস্থিতি থেকেই।
খারাপ সময়ে পাশে ছায়ার মত লেগে থাকাঃ সুসময়ে সকলেই পাশে থাকেন। দুধের মাছি বলে তাকেই। কিন্তু দুঃসময়ে পাশে থাকে ক’জন? প্রিয়জন।হ্যাঁ, সেই আপনাকে সম্মান করে যে দুঃসময়ে বা খারাপ সময় আপনার পাশে ছায়ার মত লেগে থাকেন। আপনার ভেঙ্গে পড়া মুহুর্তেও আপনাকে সহায়তা করেন। স্বান্তনা দেন। এটা শুধু সিরিয়াস সংগীর বেলাতেই নয়। যে কোন সম্পর্কের বেলায়। তাই এই বিষয়ে কঠিন পর্যবেক্ষন জরুরী।
আপনার সাথে সততার পরিচয় দেয়ঃ আপনার সংগী অবশ্যই আপনার সাথে সৎ চরিত্রের প্রকাশ করবেন । তিনি যা-ই করেন না কেন শেয়ার করবেন। তবেই বুঝবেন তিনি সম্মান করছেন। যিনি তার সংগীকে গুরুত্ব দেন, তিনিই কেবল সবকিছু শেয়ার করে সংগীর কাছে সৎ হিসেবে স্বচ্ছ থাকেন।
সম্মান করার জন্য সৎ থাকার মনোবল জরুরী। সততা থেকেই সম্মান আসে। কুটিলতা থেকে ঘৃনা আসে, সম্মান বা রেস্পেক্ট আসতে পারে না।
আপনার পরামর্শ নেয় এবং সেটা খুব গুরুত্ব দিয়ে মেনে চলেঃ যিনি আপনাকে সম্মান করেন তিনি আপনার কাছ থেকে যে কোন ব্যপারে পরামর্শ নিতে চাইবেন। আপনার পরামর্শ তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবেনও। পালন করবেন ও খুব গুরুত্ব দিয়ে। এই পর্যবেক্ষন থেকেও বোঝা যাবে তিনি আপনাকে সম্মান করেন। তবে পরামর্শ দেবার সময় আপনার যদি মনে হয় আলোচ্য বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না বা ধারনা নেই তাকে সেটা পরিষ্কার বুঝিয়ে বলা- আমার এই সম্পর্কে জ্ঞান নেই।
নির্ভরশীলতাঃ আপনাকে যদি তিনি রেস্পেক্ট করেন তবে আপনার উপর তিনি নির্ভরশীলতা প্রকাশ করবেন। একজন মানুষ অন্য কাউকে সম্মান না করে রেস্পেক্ট না করে বিশ্বাস না করে তার উপর নির্ভরশীলতা দেখাতে পারেন না। নির্ভরশীলতা আসেই সংগীর উপর রেস্পেক্ট থেকে। তাই কখনো সেই নির্ভরশীলতায় বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। মনোযোগ দিতে হবে, তার কাছে আরো বেশি নির্ভরশীলতা অর্জন করতে হবে।
আপনি নিজে তাকে রেস্পেক্ট করেন কি? কারো কাছ থেকে সম্মান আশা করার আগেই দেখুন আপনি তাকে সম্মান করছেন কি না! এটা সত্যিই খুব জরুরী একটা ব্যাপার।যদি আপনি নিজেই সম্মান না করে থাকেন তবে কিভাবে বুঝবেন তিনি আপনাকে রেস্পেক্ট করা উচিৎ? সম্পর্ক টিকে থাকা কিংবা টিকিয়ে রাখার জন্য একে অন্যকে শ্রদ্ধা সম্মান করা উচিত। এর বিকল্প নেই।
সময় দেয়াঃ আপনার সংগী আপনাকে সময় দিতে প্রস্তুত থাকবে। সময় না দেয়ার পেছনে অবশ্যই একটা ভাল লজিক থাকবে। তবেই বুঝবেন তিনি আপনাকে সম্মান করেন। যদি অবহেলা করেন তবে সময় দিতেই চাইবেন না। এটা খুব জনপ্রিয় একটা পর্যবেক্ষন। তবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে না যাওয়াই ভাল। আপনাকে নিয়ে ডেটিং এ যেতে চাইবেন অবসর সময়ে, এটা ন্যাচারাল।
আপনার সংগী আপনার সময় নষ্ট করবে নাঃ যিনি আপনাকে সম্মান করেন তিনি আপনার কাজে বাধা দিতে পারেন না, সময় নষ্ট করতেও পারেন না। তাই আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন তিনি আপনাকে কতটা রেস্পেক্ট করেন।
সন্দেহ না করাঃ আপনি যদি যে কোন কাজই করেন না কেন, আপনার সংগী সন্দেহ করবে না। আপনার পেছনে গুপ্তচর হিসেবে লেগে যাবে না। তিনি যে সম্মান করেন আপনাকে রেস্পেক্ট করেন তার প্রমান এটাই।
এছাড়াও আরো কিছু ব্যাপার থাকে যা থেকে বুঝতে পারা যায় আপনার সংগী আপনাকে রেস্পেক্ট করেন কি না। কিভাবে আপনার সংগীকে আয়ত্বে আনবেন যিনি আপনাকে রেস্পেক্ট করেন না? এটা পরের লেখায় জানাবো। তবে উপরের সব বিষয় থেকেও একট ধারনা পেয়ে যাবেন।
মন্তব্যসমূহ