প্রেম একটি আপেক্ষিক ব্যাপার। একে সংজ্ঞায়িত করা অনেক বেশি বোকামী। তার কারন প্রেমিক প্রেমিকাই তো একে সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। কিন্তু এই প্রেম কিভাবে হয়? আগে কিভাবে হতো এবং ভবিষ্যতে কিভাবে হতে পারে? সময়ের সাথে প্রেমের এই রসায়ন কতটা পাল্টাচ্ছে, কোন রেশিও ধরে এগোচ্ছে তারই কিছু আলোচনা করতে চাচ্ছি। যদি আপনাদের অনুমতি পাই তবেই।
আগেরকার প্রেমঃ কিভাবে আগে প্রেম হত?
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
প্রেমের জন্য এক সময় প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে নাভিশ্বাস প্রচেষ্টা কাজ করতো। তারা একে অন্যকে অনেক বেশি ভেবে ফলো করে, শেষে কারো বা কোন একটি বিশেষ মাধ্যমে প্রেম নিবেদন করতো। এটা আরো অনেক আগের কথা যখন প্রেমের জন্য আলাদা করে কঠিন সব আয়োজন ছিলো। আজ আমরা যে সময়ের কথা বলছি তা কেবল এক যুগ আগের কথা মাত্র। আসুন জেনে নেয়া যাক ২০০০ সাল অবধি কিভাবে প্রেম হত। কিভাবে প্রেমের পরিনতি প্রকাশ পেত আর কিভাবে চলতো মানুষের যুগল জীবন।
মানুষের প্রথম প্রেমে পড়া শুরু হতো স্কুল জীবনেই। মাধ্যমিকে যখন অষ্টম শ্রেনী ছুঁয়ে কৈশোরের হাওয়া পুরোটাই গায়ে লাগত তখন এক এক করে ছেলে মেয়েরা প্রেমের বিষয়ে জানার চেষ্টা করত। জানতে জানতে এক সময় সামনে পাওয়া মানুষটিকেই মনে মনে ভালবাসত। খুব পচন্দ করে বসত। কখনো কখনো বয়সে বড় কাউকে কখনো আবার সম বয়সী কিংবা পিঠাপিঠি কোন একজনকে। এই সময়ে মুখে প্রকাশ করা যেত না, বলা হতো না মনের ভিতরে কী কী কাজ করছে। শুধু দেখে যাওয়া, কথা বলা আর চোখে চোখে চাহনি ফেলা। প্রেমের পরিনতি খুবই কম ছিলো এই বয়সী জুটির।
কলেজে যারা প্রেমের পাখনা মেলে দিতো তারা বেশিরভাগ পরিনতির দিকে এগিয়ে যেত। এই সময়ে প্রেমিক জুটি হতো অনেক বেশি। এরা আবার অনেকেই স্কুল জীবনের ভালবাসা রাখতে পেরেছে কেউ, কেউ হারিয়ে নতুন করে শুরু করেছে। এসব অবস্থায় অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যেত খুব দ্রুততার সাথে। প্রেমিক প্রেমিকারা হন্যে হয়ে ঘুরে শেষে বিয়ের আগের রাতেই পগার পার হয়ে যেত। এই ধরনের বিয়েও শেষে পরিবার মেনে নিতো। পালিয়ে বিয়ে করার দিন ছিলো সে সময়। কিন্তু কলেজে প্রেম কিভাবে হতো?
কলেজে প্রেমের সুচনা হতো দেখাদেখির মাধ্যমে। দেখতে দেখতে একসময় কেউ কাউকে পচন্দ করে ফেলা তারপর প্রেমের প্রস্থাব। এই প্রস্তাব দেয়ার নানা রকম উপায় ছিলো। কলেজের দেয়ালে নামের সাথে প্লাস(+) দিয়ে লিখা হত নাম। সে সময়ের প্রেমের জন্য দরকার ছিলো মনের স্পর্শ, হৃদয়ে হৃদয়ে কতশত স্পর্শ যে কাজ করতো তাদের তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার অন্তরায়। কেঁপে কেঁপে উঠত নবীন নারী পুরুষের নরম চিত্ত। হয়ত গ্রহন করত নাহয় গ্রহন না করে অবহেলা করা হতো। তবু কাল্পনিক দুনিয়া নিয়েও তাদের বেঁচে থাকা ছিলো।
আবার চাকুরীতে গিয়েও প্রেমের অনেক আয়োজন ছিলো। প্রেম হতো অনেক সময়। যারা প্রেমের ট্রেন সেই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মিস করেছেন তারাই শেষে এসে প্রেমের সাথে বন্দী হয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে জাতিগতভাবে কিছুটা আবেগী আমরা। আমাদের প্রেমের সম্ভাবনাময় ফ্ল্যাটফর্ম দাঁড়িয়েছিলো কিন্তু আবেগী যান্ত্রিকতায়। চাকুরী করতে এসে অনেকেই অসম বিষম আর অকল্পনীয় প্রেমে পড়ে যান।
সব অবস্থায় প্রেমের মধ্যেই একটা কমন ব্যাপারস্যাপার ছিলো। প্রেমের ছিলো কিছু মিডিয়া। চিঠি পত্র, আকার ইংগিত, বন্ধু বান্ধব আরো ছিলো সামাজিক পার্টি বা অনুষ্ঠানের মত মাধ্যম। যেমন অনেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানে বেড়াতে প্রেমে পড়তেন।
বর্তমানে প্রেম কিভাবে হয়ঃ
এখন কিভাবে প্রেমে পড়েন প্রেমিকেরা?
প্রেমিক প্রেমিকেরা এখন প্রেমে পড়েন খুব রোমান্টিক আর আধুনিকতায়। প্রেমের মিডিয়া এখন খুব সহজ। ফোনেই প্রেমে পড়ে যাচ্ছেন অনেক নারী পুরুষ। নির্জনে দু’দিন দেখা হলেই প্রেম সম্পন্ন। ইন্টারনেট আর ফেইসবুকের অবদান তো আছেই। সব প্রেমের শেষ পরিনতিও সহজেই বলে দেয়া যায়। বেশিরভাগ প্রেমই ফেইক। শুধু শারিরীক ব্যাপার মাত্র।
বর্তমানের প্রেমের বহুমাত্রিকতা চোখে পড়ার মত। এখন প্রেমে পড়ে মানুষের কুতসিৎ সব রূপ বের হয়ে আসে। প্রেমে পড়ে অনেকেই আজকাল যা করছেন তা হল, প্রেমিকের নোংরা ছবি ওয়েব আপলোড করে দিচ্ছেন। অনেকেই আবার স্মাগলিং এ জড়ীয়ে পড়ছেন।
প্রেম দেখে মনে হয় এখন শুধু নামেই প্রেম করেন মানুষ আর বাকী সব মিথ্যের ছাউনি।
তবে যদি শারিরীক প্রয়োজন মুখ্য হয় তবে এসময়ের প্রেম হচ্ছে সবচেয়ে উন্নত। সিদ্ধান্ত প্রেমিক প্রেমিকার। মানুষের মনের কথা বের হয়ে আসে শুধু শেষ দৃশ্যে। আর পুরো রিল জুড়ে থাকে কঠিন সব বিশ্বাস ভালবাসার নজির!
মন্তব্যসমূহ