এই পর্বটি উৎসর্গ করছি দিক পরিবর্তী প্রবাহ এর জনক নিকোলা টেসলাকে। আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় নিকোলা টেসলা নন, তাই শুধু এক বাক্যে এই গুনী বিজ্ঞানীর সম্পর্কে বলার চেষ্টা করব, “Can you imagine world without Tesla??”
আমাদের উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের অন্যতম একটা অধ্যায় “তড়িৎ চৌম্বক আবেশ ও দিক পরিবর্তী প্রবাহ “। অনেক রোমাঞ্চ চেপ্টারটা পড়তে শুরু করলাম। কিন্তু মাঝপথে AC নিয়ে আমার বইয়ে যে ক্নসেপ্ট দেখলাম তাতে আমি বিব্রত এবং হতাস। তাই সবার সাথে AC, DC নিয়ে কিছু জিনিস শেয়ার না করে পারলাম না।কারণ—-
Most of you need it,,,
Some of you gonna love it
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
সতর্কতাঃ নিচের দিক পরিবর্তী প্রবাহ ও একমুখী প্রবাহের বেসিক টপিকগুলো নিয়ে নিতান্তই আমার ব্যাক্তিগত সমস্যা আর তার সাদামাটা সমাধান দেয়া আছে। তাই কেউ যদি বলে এখানে তোমার ভুল হয়েছে আমি অবশ্যই অবাক হব না।
পয়েন্ট ১— এখানে আমি সংজ্ঞা দিব। এটা শুধুই আদিখ্যেতা। দিতে হবে তাই দিচ্ছি।
Alternating current (AC) is an electric current which periodically reverses direction, in contrast to direct current (DC) which flows only in one direction. Alternating current is the form in which electric power is delivered to businesses and residences, and it is the form of electrical energy that consumers typically use when they plug kitchen appliances, televisions, fans and electric lamps into a wall socket. A common source of DC power is a battery cell in a flashlight. The abbreviations AC and DC are often used to mean simply alternating and direct, as when they modify current or voltage.
কারোর ইংলিশ বুঝতে সমস্যা হলে কোন প্যারা নাই। কারণ এখানে বইয়ের কথাগুলোই লেখা আছে।
শুরু করার আগে শুধু এতটুকু বলে নেই,
“AC” Voltage and Current is Voltage and Current that changes.
“DC” Voltage and Current is Voltage and Current that is steady.
এসব জিনিস পড়ে আমার মাথায় সবার আগে আসা প্রশ্নঃ
ডিসি কারেন্টে ভোল্টেজ চেঞ্জ হয় না কেন?
আমি খুবই সাদামাটা ভাবে বলছি, আমাদের বইয়ে আছে যে, একমুখী প্রবাহে কারেন্ট ফ্লো একমুখী। তাই কারেন্ট ফ্লোকে একমুখী রাখতেই ভোল্টেজকেও কন্সটেন্ট থাকতে হয়। মানে বুঝলে না, তাই তো?আমরা সার্কিট সলভ করার সময় দেখেছি ডিসি সোর্সের পসিটিভ সাইড থেকে কারেন্ট নেগেটিভ সাইডে যায়। একমুখী প্রবাহের ক্ষেত্রে ভোল্টেজ পরিবর্তন হবে না, তাই তড়িৎ প্রবাহের দিকও পরিবর্তন হবে না।মনে কর তোমার কাছে একটা পেন্সিল ব্যাটারি আর একটা মোটর আছে। তুমি প্রথমে ব্যাটারিটা যেভাবে রেখেছ, পরেরবার ব্যাটারিটাকে ঠিক উল্টো করে দাও, কি হবে? যেহেতু কারেন্ট পসেটিভ সাইড থেকে নেগেটিভ সাইডে যায়, তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তন হয়ে যাবে। কথাটা ঠিক না বুঝলে ছবিগুলা দেখ। তাই যদি ভোল্টেজ কন্সটেন্ট রাখা যায়, তাহলে তড়িৎ প্রবাহের দিকও একমুখী রাখা যাবে। একবার কত সুন্দর তাই না!
তার পরই আমার প্রশ্ন,,, দিক পরিবর্তী প্রবাহে ইলেকট্রন কি তারের মধ্যে আসলেই এমন লাফালাফি করে??
আমার স্বল্পজ্ঞান খুবই সাবলীলভাবে বলবে “না” ইলেকট্রন লাফালাফি করে না। এখানে তাহলে হয় কি? এটা সবাই জানি যে ইলেক্ট্রনের প্রবাহ তড়িৎ প্রবাহের বিপরীতে হয়। ইলেক্ট্রন একদিকে যায় এবং আবার তার বিপরীত দিকে ফিরে আসে এবং তার কারণে ইলেক্ট্রনের মোট অবস্থানের পরিবর্তন হয় শূন্য। এখানে Time Period জিনিসটা বুঝা দরকার। বইয়ে লেখা আছে যে সময়ে পরিবর্তী তড়িচ্চালক শক্তি বা প্রবাহের একটি পরিবর্তন চক্র সম্পন্ন হয় তাকে পর্যায়কাল বলে। আসলে আসল কথা হলো একটা ইলেকট্রন একদিকে গিয়ে আবার পেছনের দিকে ফিরে আসতে যে সময় লাগে তাকে পর্যায়কাল বা Time Period বলে। YouTube এ Newton’s Cradle নামের একটা জিনিস সার্চ দাও, সেটা দেখলে তুমি দিক পরিবর্তী প্রবাহে ইলেক্ট্রনের দিক সম্পর্কে একটা ধারণা পেতে পার।
তাহলে এবার প্রশ্ন আসে দিক পরিবর্তী প্রবাহে তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তন হয় কেন? আর সাইন গ্রাফ দিয়েই বা কি বুঝানোর ট্রাই করে?
আমরা জানি, দিক পরিবর্তী প্রবাহে তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তিত হয়। তাহলে এটা কিভাবে হবে দেখা যাক, এবার আমাদের ভোল্টেজ vs সময় গ্রাফের সাইন গ্রাফটার গ্রাফের শুরু থেকে ভোল্টেজ বাড়তে থাকবে ততক্ষণ তড়িৎ প্রবাহ বাড়তে থাকবে যখন চূড়ায় থাকবে তখন তড়িৎ প্রবাহের মান অপরিবর্তিত ও সর্বোচ্চ থাকবে তবে যখনই ভোল্টেজ আবার নিম্নমূখী হতে শুরু করবে, তখন আবার তড়িৎ প্রবাহ আবার কমতে শুরু করবে। এবার ঘটবে আসল ঘটনা, যখনই ভোল্টেজ নেগেটিভ হতে শুরু করবে, তড়িৎ প্রবাহের দিক কিন্তু আগের মতো থাকবে না, তড়িৎ এবার পূর্বের প্রবাহের বিপরীতে চলতে শুরু করবে। কারণ, তড়িৎ প্রবাহ পসেটিভ সাইড থেকে নেগেটিভ সাইডে যায়। এখন ভাই, যদি ভোল্টেজ নেগেটিভ করে দেই তাহলে আগে যেটা পসিটিভ সাইড ছিল সেটা নেগেটিভ সাইড হয়ে যাবে, তাই তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তিত হবে। তাহলে বলতে পারি যে দিক পরিবর্তী প্রবাহে ভোল্টেজ পরিবর্তন হয় তাই প্রবাহের দিক পরিবর্তিত হয়। আর হ্যাঁ, Alternating Current এর সাইন গ্রাফ ইলেক্ট্রনের চলার পথ বুঝায় না, এটা ভোল্টেজ vs টাইমের গ্রাফ।
আচ্ছা তারপর ঝামেলাটা লাগলো, যদি একটা বালব জ্বালানো হয় Alternating Current দিয়ে তাহলে কি হবে?? ভোল্টেজের এই লাফালাফি কি ঝামেলা করবে না???
আগের প্রব্লেমের সলভ করার পর এটা মোটামুটি বুঝে গেয়েছিলাম, যখন কোন একটা বালবে আমরা Alternating Current দিব তখন একটা চমৎকার ঘটনা ঘটবে। প্রথমে ভোল্টেজ যখন বাড়তে থাকবে তখন বালবের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের মান বাড়তে থাকবে তাই আলোও বাড়তে থাকবে। তাহলে যখন ভোল্টেজের মান চূড়ায় থাকবে তখন তড়িৎ প্রবাহের মান অপরিবর্তিত ও সর্বোচ্চ থাকবে। তাই তখন বালভটি সবচেয়ে বেশি আলো দিবে। তবে যখনই ভোল্টেজ আবার নিম্নমূখী হতে শুরু করবে, তখন আবার তড়িৎ প্রবাহ আবার কমতে শুরু করবে। ফলে, বালভের আলোও কমতে থাকবে। যখনই ভোল্টেজ নেগেটিভ হতে শুরু করবে, তড়িৎ প্রবাহের দিক কিন্তু আগের মতো থাকবে না, তড়িৎ এবার পূর্বের প্রবাহের বিপরীতে চলতে শুরু করবে। তাই তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তিত হবে। যা ইচ্ছা তা হোক, আমার বালভ জ্বালাতে কারেন্ট ফ্লো লাগবে। সেটা আছে তো বালভ জ্বলবে। কথা শেষ!
এখন ঝামেলাটা হলো যখন ভোল্টেজ শূন্য থাকবে তখন কি হবে? সোজা কথা, কারেন্ট ফ্লো থাকবে না তাই বালভও জ্বলবে না। তবে আমরা দখব বালভ জ্বলছে কারণ, বালভ প্রতি ১/৬০ সেকেন্ডে একবার বন্ধ হবে, আমাদের চোখ তা বুঝতেই পারে না। এটা কেন হলো আর বলার মুড নাই। পর্ব ২ এ আরো অনেক কথা হবে এসব নিয়ে।
আমি একজন খারাপ ছাত্র যে বইয়ে লেখা সেই কঠিন লেখাগুলো বুঝতে পারি না, যতক্ষন না তাদের ভেতরের মানে বুঝতে পারি। তাই আমার এসব পাগলামি। তোমরা হয়তো বলবে এসব সময়ের অপচয়। কিন্তু আমি বলব এসব পাগলামিতেই আছে ফিজিক্সের আসল রোমাঞ্চ।
বিদায়ের আগে তোমাদের জন্য আমার অসংখ্য শুভকামনা , ” π এ যত পদ তত বছর পরমায়ু হোক।”
মন্তব্যসমূহ