কিভাবে ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় খুজবেন? এর উপায় অনেক। তার মধ্যে সহজতর পদ্ধতিগুলো জানা থাকলে যে কোন ছাত্রই হয়ে উঠতে পারেন ভাল ছাত্র। প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত অনেক দামী আর বৈচিত্রময়। তাই এই মুহুর্তগুলোকে কাজে লাগানোই হচ্ছে প্রতিভাবান লোকেরদের কাজ। ছাত্র জীবনেও এরকম একটি বৈচিত্রময় কাল অতিক্রম হয়। একে অনেক ছাত্র সাজিয়ে ফেলেন নিজেদের মত করে। যার ফলাফল নিশ্চিত ভাল রেজাল্ট। আর এই আয়োজনের নাম হল প্রতিদিনের রুটিন অথবা ডেইলি রুটিন। কিভাবে ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় অনুশীলন করতে গেলে কতগুলি মৌলিক বিষয় আসে। তার মধ্যে একটি অবশ্যই ডেইলি রুটিন। এছাড়াও আছে সহায়ক অনেক কাজ। তবে ডেইলি রুটিনের অনেক সুবিধা আছে। যে কোন খারাপ ছাত্রকেই ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় বাতলে দিতে পারে। এই লেখায় আমি তাই শুধু ডেইলি রুটিন নিয়েই আলোচনা করেছি। বাকী বিষয় গুলি নিয়ে পরে আরেকটি লেখায় আলাপ করব।
কিভাবে ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় অনুশীলন করবেন?
ডেইলি রুটিন(Daily Routin): ডেইলি রুটিনের কথা বলার সময় আমার একটি উদাহরনের কথা মনে পড়েছে। সেটা এই রকম- একটি ট্রেন চালানোর জন্যে প্ল্যাটফর্ম ত্যাগ করার আগে রেল মাষ্টার অর্ডার দিলেন যে আজ আরো পাঁচটি বগি এই ট্রেনের সাথে জুড়ে দেয়া হবে তার কারন যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি। যেমন হুকুম তেমন কাজ, কিন্তু এই কাজের জন্য সময় দরকার। পেছনের ট্রেন খানা কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে, তবু মাষ্টার কাজটি করলেন। এর মাঝে পেছনের ট্রেন চলে আসায় তিনি লাইন ম্যান দিয়ে আটকে দিলেন এবং এই ট্রেন ছাড়ার পর পেছনের ট্রেন ফ্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করালেন।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
ডেইলি রুটিনের সাথে এই উদাহরনের একটা ছোট মিল আছে। প্রথমত, রুটিন করে ফেলার পর অবশ্যই অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিয়ে সেটা দক্ষ ষ্টেশন মাষ্টারের ন্যায় পরিচালনা করতে হবে। একটি ডেইলি রুটিন শুরু হতে পারে ঘুম থেকে উঠার পরপর-ই। এটা সকালে যে কোন মুহুর্ত হতে পারে। তবে সুর্য উঠার আগে হলে ভাল হয়। কারন এই সময়ে শরীরের ইন্দ্রীয়গুলো ভাল কাজ করে। কিভাবেভাল ছাত্র হওয়ার উপায় অনুশীলন করবেন তা একটি রুটিন আপনাকে দিতে পারে। একটি ট্রেনের ইঞ্জিনের চেয়ে বেশি বড় ভুমিকা রাখতে পারে।
কিভাবে ভাল ছাত্র হবার উপায় বের করা যায় তা বিশ্লেষন করছি-
প্রথমেই একটি ডেইলি রুটিনের জন্য যা করতে পারেন তা হচ্ছে-
পরিকল্পনা তৈরীঃ নিজে নিজেই যেহেতু আপনি একটি রুটিন বানাবেন তাই নিজে থেকেই পরিকল্পনা করুন। কিভাবে সাজালে ভাল হয়, কোন কাজের উপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে এসব মাথায় রেখে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করে ফেলুন। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে যান।
সময় ভাগ করাঃ সময়কে ভাগ করে নেয়ার পর তা দিয়ে দিনের একেক টি কাজ পরিপুর্নভাবে সম্পন্ন করতে পারাই রুটীনের কাজ। যদি ব্যর্থ হয় তবে রুটিন ভ্যালু লেস হয়ে যায়। তাই একটি রুটিন কখনোই এলোমেলো হতে পারেনা সফলতার জন্যে। সময়ের কাজ সময়ে করতে পারার একটা চর্চা করতে হবে।
সময় ভাগ করে ফেললে আপনার রুটিনের জন্য সহজ হয়ে যাবে। তবে এমন সময় নিয়ে আসবেন না যে সময়ে আপনি কোন নির্দিষ্ট কিছুই করতে পারবেন না। যেমন আপনি মনে করলেন যে দুটা কাজের ফাঁকে ১০মিনিট সময় আছে অন্য একটি কাজ করে ফেলা যায়। হ্যাঁ করে তো ফেলা যায় তবে তা যেন বড় কোন কাজ না হয় সে দিকেই খেয়াল রাখতে হবে। ডেইলি রুটিনের জন্য অবশ্যই পাঁচ মিনিটের বেশি সময় লাগে এমন সব কাজ সময়ের মধ্যে ধরতে হবে।
সময় পরিমাপঃ প্রত্যেক কাজের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে। যেমন আপনি একটি হোমওয়ার্ক করতে আপনার হয়ত ৩০ মিনিট সময় লাগে। তাহলে আপনার রুটিনে ত্রিশ মিনিটের কম সময় নেয়া বোকামি হবে। এজন্য প্রত্যেক কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরিমাপ করতে হয়। রুটিন করার আগে এই সময়জ্ঞান আপনাকে অর্জন করে নিতে হবে।
রুটিন স্থায়ীকরনঃ প্রারম্ভিক পর্যবেক্ষনের জন্য আপনি একটি খসড়া রুটিন দিয়ে শুরু করতে পারেন। যেমন ম্যাথমেটিক্স এর জন্য প্রতিদিন এক ঘন্টা। কিন্তু কিছু দিন(প্রায় এক মাসের) মধ্যে দেখলেন যে একঘন্টা অনেক কম হচ্ছে। আপনার আরো বেশি সময় দরকার। তাহলে আরো বাড়িয়ে নিতে পারেন। বাড়িয়ে নিলে যদি মনে হয় যে এবার ঠিক আছে তখন সেটা স্থায়ী ডেইলি রুটিন হিসেবে নিন। এভাবে খসডা থেকে আপনি স্থায়ী রুটিনে অনেক কাজে সময় কমাতেও পারেন।
উদাহরন, আপনার গোসলে প্রতিদিন ৩০ মিনিট সময় লাগে। আপনি চাইলে আরো দ্রুত গোসল সারতে পারেন। তখন হয়ত ৭মিনিটের মধ্যেই গোসল শেষ, একে স্থায়ী রুটিনে নিন। আর এই সাত মিনিটের বাইরে আর যাওয়া যাবে না। এটাই আপনার ইফিসিয়েন্সি বা দক্ষতা। কাজে দিন দিন দক্ষতা বাড়ে। তাই সময় আমাদের দিন দিন বাড়তে থাকে, কারন কাজের জন্য সময় কম লাগে। এভাবেই আপনি অনেক বেশি কাজ শেষ করতে পারবেন। যিনি সেরা তিনি অবশ্যই আমাদের চেয়ে দ্রুত কাজ করেন।
রুটিন পরিবর্তনঃ এটা লাগবেই। কোন রুটিনেই আপনি জীবন ধরে রাখতে পারবেন না। তার জন্য বৈচিত্র নিয়ে আসতে হয়। তিনমাসে ছোটখাট পরিবর্তন করতে পারেন। আবার বছরে নতুন প্ল্যানিং কালে অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারেন। কোন কোন ক্ষেত্রে চিকিৎসা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক কারনেও পরিবর্তন লাগতে পারে। পরিবর্তন কে উন্নতি হিসেবে নিন। যেমন আপনার সাধারন জীবন থেকে উন্নত জীবন। নিজেই বের করুন কী করলে আপনি আরো উন্নত জীবন পাচ্ছেন।
আশাকরছি এভাবেই আপনি একটি ডেইলি রুটিনের মধ্যে দিয়ে নিজেকে আরো উন্নত করতে পারবেন।
আরো পড়ুন ——————————————–
কিভাবে ভাল ছাত্র হওয়া যায় ? পার্ট ১
======================================
মন্তব্যসমূহ