বর্ষাকাল ভ্রমনের জন্য খুব বেশি উপযোগী নয়। কিন্তু তারপরেও আপনি কিছু জায়গা ঘুরে আসতে পারেন। গ্রীষ্ম বর্ষার মাঝামাঝি থেকেই ভ্রমণ শুরু করতে পারেন অভ্যন্তরীণ কিছু দর্শনীয় জায়গায়। এর মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যে সুন্দরবন অন্যতম। সুন্দরবন ঘুরে দেখার জন্য আপনার নৌপথ ব্যবহার করাটা জরুরী। নদীর পানির মধ্যে গা ভাসিয়ে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে মন খুলে ঘুরে দেখা যায় গোলপাতা আর সুন্দরী গাছের আচ্ছাদিত বন সুন্দরবন। কিভাবে বর্ষাকালীন ভ্রমণ পরিকল্পনা করবেন দেখে আসি।
বর্ষার সময়ে কোন কোন জায়গায় ভ্রমনে বের হবেন?
আমাদের দেশের মানুষের ভ্রমণ তালিকায় যেসব নান্দনিক স্থানগুলো থাকে তার তালিকা ছোট করে বললে নিচের মত।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
বান্দরবান ভ্রমণ |
কক্সবাজার ভ্রমণ |
সাজেক ভ্রমণ |
দার্জিলিং ভ্রমণ |
সিলেট ভ্রমণ |
ভুটান ভ্রমণ |
নেপাল ভ্রমণ |
শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ |
কলকাতা ভ্রমণ |
সুন্দরবন ভ্রমণ |
কুয়াকাটা ভ্রমণ |
সোনারগাঁও ভ্রমণ |
সিকিম ভ্রমণ |
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ রাঙামাটি ভ্রমণ জাফলং ভ্রমণ |
বর্ষাকালীন পরিকল্পনায় আরো কিছু দর্শনীয় জায়গার পছন্দ করতে পারেন। তার মধ্যে শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকা ভ্রমন কিংবা চাঁদপুর বা নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপের দিকেও যেতে পারেন। সিলেট ভ্রমণ পরিকল্পনা হতে পারে কিংবা বরিশালের দিকে যেতে পারেন লঞ্চ ভ্রমনে। এক্ষেত্রে একটু আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত বুঝে শুনে যাওয়া ভাল। কারন বর্ষার সময়ে লঞ্চডুবি হতে পারে , নদীর ঝড় বৃষ্টি ভয়াল আকার ধারন করে।
বিদেশের দিকেও যেতে পারেন। বিদেশে গেলে এ সময় শুষ্ক আবহাওয়ার দেশ পছন্দ তালিকায় নিয়ে আসা উচিৎ। দেশের মধ্যে উপভোগ করার মত ছিলো বর্ষা। যেহেতু বিদেশ যাবেন, তাহলে আবার বর্ষা কেন থাকবে পছন্দ তালিকায়। চলে যান শুষ্ক এলাকায়।
অনেকেই চলে যান ইউরোপ আমেরিকা কিংবা কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর ইত্যাদি স্থানে।
বর্ষাকালে আমার পছন্দের ভ্রমণ পরিকল্পনা
বর্ষাকালীন নানান বৈচিত্র্যের বাংলাদেশ আমার পছন্দের। তাই একবার ঘুরে এসেছিলাম সুন্দরবন আর রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি। এর সাথে ছিলো মাইকেল মধুসুদনের জমিদার বাড়ি আর লালন শাহের মাজার। ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখেছিলাম।
পুরো ভ্রমন প্রক্রিয়ায় আমরা ছিলাম চারজন। তখন কেবল বর্ষা শুরু হয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরিমান খুব বেশি নয়। দিনে অন্তত একবার করে বৃষ্টি হচ্ছিলো। সোহাগ পরিবহনে আমরা সকাল বেলায় যাত্রা শুরু করি। বিকেলের দিকে খুলনায় পৌঁছাই। এর মধ্যে কতগুলো জেলা যে পার হয়েছি তার হিসাব রাখতে পারিনি। খুলনায় নেমে আমাদের প্ল্যানটা আরেকবার হিসেব করে দেখলাম। বেলা থাকায় সেই দিনই বাঘেরহাট রওয়ানা হই। বাঘেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখবো আগেই প্ল্যান ছিলো। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। চলে গেলাম লোকাল বাসে চড়ে। জনপ্রতি ভাড়া ৫০টাকা ছিলো মনে হয়। তবে বাঘেরহাট যাবার পথেই ষাটগম্বুজ মসজিদ। সেখানে নামিয়ে দিলো ওরা। এখানে বেশ কিছু মজার দৃশ্য দেখি আমরা। সাজানো গোছানো একটা এলাকা। অনেক মানুষ দেখতে আসেন। মসজিদের অনেক বয়স হয়েছে তা দেখলেই বোঝা যায়। তারমধ্যে কিছু কনস্ট্রাকশন কাজ চলছিলো।
রাতে আমরা বাঘেরহাট একটি হোটেলে অবস্থান নেই। এখানে খানজাহান আলীর মাজার দেখলাম। বাঘেরহাট মোটামুটি জনবহুল এলাকা। এখানে শহুরে প্রভাব কম। যে যেমন পারে তেমন জীবন নিয়ে সবাই ব্যস্ত। মাজারে অনেক মানুষের ভীড় হয়। মানুষের মধ্যে মাজার কেন্দ্রীক একটা আগ্রহ আছে।
খাবারের জন্য হোটেলের নিচে একটা ছোট ভাতঘরে যাই। এখানে বিরিয়ানি, ভাত পাওয়া যায়। চিংড়ি কিছুটা সহজলভ্য। চিংড়ি ঘের আছে আসেপাশে।
পরেরদিন রওয়ানা হই মংলা সমূদ্র বন্দরের দিকে। সেখানে পৌঁছাতে আমাদের প্রায় সকাল দশটা বেজে যায়। এর মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছিলো। ছাতা আর রেইনকোট আমাদের সাথেই ছিলো। মংলা সমূদ্র বন্দরের বাস ষ্টপেজ এ নামতেই নৌকার মাঝির দল ছুটে এলো। একেকজনের একেক প্যাকেজ দরদাম। কেউ কেউ অনেক আকর্ষনীয় অফার দিতে থাকল। শেষ পর্যন্ত আমরা কিছুটা দরদাম করেই হাজার দুয়েকের মধ্যে একটা মাঝিসমেত নৌকা ভাড়া নেই। উদ্দ্যেশ্য সুন্দরবন দেখবো।
মাঝির সহযোগীতায় সুন্দরবন পৌছে যাই। দেখার মত অনেক কিছুই আছে এই বনে। পুরো বনের ভেতর যেতে না পারায় সম্ভাব্য জায়গাগুলো দেখার চেষ্টা করি।
অনেক সময় নিয়ে ভেতরের দৃশ্য দেখি। অনেক ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলেও পারা যায় না। বন বিপদজনক। এর মধ্যে আছে বনবিভাগের নজরদারী। তাই দ্রুত বেরিয়ে আসি।
আসার পথে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে যাই। কিন্তু ভাগ্য ভালো আমরা তখন প্রায় তীরে এসে পৌঁছাই। এর মধ্যেই আমাদের সুন্দরবন ভ্রমন শেষ হয়।
তারপর ছুটে যাই পরবর্তী গন্তব্যে। সে গল্পগুলি আরো বেশি মজার অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ন। আরেক সময় কোন এক লেখায় তার বর্ননা দেব আশা করছি।
মন্তব্যসমূহ