আমাদের বই পড়ার রেকর্ড কেমন তা জানা না থাকলে ও আমরা যে বই পড়তাম তা ঠিক। কম করে হলেও অনেকেই পাচ দশটা বই কিনে পড়ে ফেলতাম। ছেলে বেলার কথা। ঘুমানোর আগে একটা বই না পড়ে ঘুমের কথা ভাবা যেত না। যারা বই পড়তেন কম তারাও রেগুলার কোন না পত্রিকা অথবা ম্যাগাজিন পড়তেন। প্রতিদিনকার অভ্যাস ছিলো মানুষের।বই পড়ার অভ্যাস মানুষের কি পরিবর্তন করেছিলো তা জানেন সবাই। তারপর দেখেছি ধীরে ধীরে ইন্টারনেট আর সহজলভ্য নাটক সিনেমা চলে এলো। পর্দা কাঁপালো দেশী বিদেশি বহু লাইভ অনুষ্ঠান। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা চলে এলো তুংগে। সাধারন মানুষের সময় চলে গেলো অন্যের পকেটে। বলা যায় পাপেট শো’র মতো মঞ্চ চলছে পুরা দস্তুর। বাইরে থেকে নাড়ছে কেউ একজন কিংবা একাধিক চালিকাশক্তি।
বইপড়া নিয়ে অনেক আগে থেকেই বহু লেখক লিখেছিলেন তাদের মন্তব্য সাজেশন। তবু এর কেন যেন জনপ্রিয়তা লোপ পেয়েই যাচ্ছে বাংলাদেশে। অন্যান্য দেশের কথা যদি বলি তবে সেসব দেশে ওরকম হারে কমেনি। এখনো সবাই নিয়ম করে বই পড়েন। আমাদের দেশের মানুষ বই পড়েন কিন্তু তরুন আর কিশোরদের মাঝে সেরকম প্রবনতা লক্ষ্যনীয় নয়।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
বই পড়ার পেছনের বাধাসমুহঃ
ফেইসবুকিং একটি উল্যেখযোগ্য নাম যা তরুন আর উঠতিদের মাঝে বই পড়াকে করেছে বিরক্তিকর। অথচ ফেইসবুকের জনক মার্ক জুকারবার্গের ২০১৬ সালের ব্যাক্তিগত টার্গেট হচ্ছে কমপক্ষে মাসে একটি বই পড়া। আগে সে প্রতি বছর দু’টা বই পড়তই। এখন সেটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানোই হয়ত তার মাথায় আইডিয়া আসে কারন।
অপ্রাসংগিক বিষয়ে মত্ত থাকা আরেকটি কারন হতে পারে। বই পড়ার অভ্যাস যাদের নাই তারা বেশিরভাগ দেখা যায় অন্য কোন অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে সময় দিচ্ছে। অনেকেই দেখা যায় পর্ন ছবি কিংবা পর্ন গল্প পড়ে সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন। এটা মানুষের সাময়িক ইন্দ্রিয়কে জাগ্রত করে ঠিকই পরবর্তিতে বই পড়ার প্রতি মন বিষিয়ে তোলে। তাই বই পড়ার অভ্যাস রাখতে ওসব থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।
কাজের ব্যাস্ততা আরেকটি কারন হয়ে দাঁড়ায় বই পড়ার অভ্যাস নষ্ট করার জন্য। তাই অনেকেই দেখি কাজই করেন। ব্যাক্তিগত ব্যাপারে হতাশ থাকেন। এমন একটা সময় আসে যখন তার কাজও ভালো লাগে না আবার বই পড়ারও ইচ্ছে থাকে না। অভ্যাসের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে যেতে থাকে। এজন্যই নিজের প্রতি পুরো কন্ট্রোল রাখতে হয়। কাজ জীবনের অংশ কিন্তু জীবন শুধু মাত্র কাজের জন্য নয়। জীবনে আরো অনেক উপভোগ্য বিষয় আছে তা উপলব্দি করতে হয়।
বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর উপায়। আজকাল ইবুক পাওয়া যায়। অনেক ফ্রী ইবুক সাইট আছে সেখান থেকে নিয়ে পড়ার অভ্যাস করা যেতে পারে। যেহেতু মানুষ ডিবাইস মুখি তাই স্মার্টফোন কিংবা ট্যাব দিয়েই শুরু করুন আপনার বই পড়া। তবে প্রিন্টেড বই পড়তে সুবিধা কম নয়।
প্রতিদিনের জন্য কিছুক্ষন সময় রাখুন। দিনে ৩০মিনিট সময় হতে পারে আপনার জীবনের অনেক সুন্দর একটা অধ্যায়ের সমষ্টি। শুরু করুন যে কোন বিষয়ভিত্তিক বই দিয়ে। যদি মজা না পান তবে বিষয় কিংবা লেখক চেঞ্জ করে পড়ুন। লেখার মান খারাপ তাই বলে আপনি পড়াই বন্ধ করে দিবেন তা হয় না। পাঠকের সৃষ্টি হলে লেখকেরও সৃষ্টি হবে। লেখক আর পাঠক একে অন্যের সাথে অংগাঅংগি জড়িত। এভাবেই আপনি উন্নতি করুন বই পড়ার অভ্যাস।
———————————————————————
আমাদের নিয়মিত আপডেট পেতে চাইলে ইমেইল সাবস্ক্রাইব করুন-