অনেক শিশুর রাগ অত্যন্ত বেশি হয়ে থাকে। আবার অনেক শিশু খুবই শান্ত। শিশুদের প্রকৃতি একেক জনের একেক রকমের। যার রাগ বেশি তার সাথে খুব যত্ম সহকারে কথাবার্তা কিংবা সতর্ক হয়েই চলতে হয়। রাগী শিশুরা আর অন্যান্যদের থেকে আলাদা হয়। তাদের না বুঝে কোন কিছুতে ধমক বা মারধর করা ঠিক নয়। তাই জেনে নিন কিভাবে শিশুর রাগ নিয়ন্ত্রন করবেন? রাগী শিশুর নিয়ন্ত্রনে বাবা মায়ের করনীয় কাজগুলো দেখে নিন।
অনেক সময় শিক্ষক, মা বাবা কিংবা ডাক্তার, কাউন্সিলর শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়ে যান। শিশুদের রেগে যাওয়া এবং তাকে সঠিক গাইড বা পথ দেখিয়ে দেয়া দূরূহ হয়ে ওঠে। এজন্য শিশুর রাগের বিষয়টি মাথায় নিয়ে তাকে এমন পদ্ধতিতে বুঝাতে হয় যেন সে তার সঠিক করনীয় ধীরে ধীরে বুঝতে পারে।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
শিশুর রাগ কিভাবে নিয়ন্ত্রন করবেন?
রেগে যাওয়া শিশুর রাগ নিয়ন্ত্রন করা খুব সহজ হয় না। তাকে অনেক সময় অনেক বেশি আদর দিয়েও রাগ কমানো যায় না। এজন্য দরকার হচ্ছে একটা সুন্দর প্ল্যানিং। পরিকল্পনা করলে শিশুর রাগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। তবে সব কিছুর আগে রাগের ধরন বুঝতে হবে। শিশুর রাগ করার কারন বুঝতে চেষ্টা করুন। রেগে যাওয়াটা কত বশি দ্রুত হয়? তার কোন রকম শারীরিক কষ্টের কারনে রাগ বেশি হচ্ছে কি না তাও দেখা দরকার। সব ধরনের সম্ভাবনা সামনে রেখে রাগ নিয়ন্ত্রন প্রক্রিয়া গ্রহন করা যেতে পারে।
পর্যবেক্ষণ করুনঃ কমপক্ষে এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে শিশুর রাগ পর্যবেক্ষন করুন। রাগ করার সময় সে কী করে? কতক্ষণ রেগে থাকে? রেগে যাওয়ার পর তার কাদের উপর রাগ প্রয়োগ করতে দেখা যায় এসব। রাগ পড়ে গেলে সে কেমন করে?
পুরো প্রক্রিয়াটি ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রচন্ড ধৈর্য্য ধারন করে তাকে সঙ্গ দিতে হবে। কোন অবস্থাতেই তার কথা মত রেগে যাওয়ার কারনে যা চাইছে তা দিয়ে দেয়া যাবে না। তাকে চোখে চোখে রাখুন। কিন্তু নাগালের বাইরে যেতে দিবেন না।
এই পর্যবেক্ষন একটি কাগজে লিখে নিতে পারেন। কেন সে রেগে গিয়েছিল? কতক্ষন রেগেছিলো? কিভাবে থামল? কার প্রতি বেশি রেগেছিলো?
এই পর্যবেক্ষন থেকেই আপনি কিভাবে শিশুর রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন তার উপায় বের হবে। পদ্ধতি গ্রহনঃ রাগ নিয়ন্ত্রনে শিশুকে যে কোন একটি কিছু হয়ত প্রস্তাব করাই লাগে। যদি ভাল করে পর্যবেক্ষন করে থাকেন, দেখবেন সে কোন না কোন কিছু পেয়ে রাগ কমিয়েছে। রাগ সর্বোচ্চ কয়েক ঘন্টা থাকে। এর মধ্যেই রাগ পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে রেগে যাওয়া শিশুর কার্যকলাপ দেখে সিদ্ধান্ত নিন, সে কেন রাগ থামালো? তার জন্য সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কী?
যদি এমন কোন বিষয় তার রাগ কমানোর কারন হয় যা সত্যিই তার জন্য ক্ষতির কারন, তবে সেসব বস্তু বা পন্য থেকে তাকে দূরে রাখার চেষ্টা করতে হয়। এক্ষেত্রে তার দাবী করা বস্তু বা পন্যটি তাকে না দিয়ে অন্য কোন বস্তু বা পন্য দিয়ে রাগ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া।
এমন যদি হয় যে রাগ খুব অল্প সময়ে স্বাভাবিক আচরনে ফিরে আসে, তবে সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র সময় নিয়ে অপেক্ষা করাই হবে শ্রেয়। কখনোই শিশুর রেগে যাবার সময় আপনিও রেগে যাবেন না।
শিশুর রাগ করা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। একে স্বাভাবিক আচরন হিসেবে দেখুন।
নিজেদের মধ্যে কারো যদি রেগে যাবার প্রবনতা বেশি থাকে তাকে কখনোই শিশুদের সামনে রাগতে দিবেন না। এক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির রেগে যাবার সময় শিশুকে সরিয়ে নিন।
সামাজিক গন্ডির ভেতর কোথাও ঝগড়া বা মারামারি হলে সেখানে শিশুকে না রাখাই ভালো। যদি কখনো দেখে ফেলে তবে সেখান থেকে যত টা সম্ভব তাকে শেখাতে হবে, মারামারি বা ঝগড়া খুবই খারাপ। এর ফলাফলা তাকে দেখান। মারামারিতে মানুষ কষ্ট পায়, সেটা বুঝাতে পারেন। খুব অল্প বয়সী ২ বছরের নিচের শিশুদের এসব থেকে দূরে রাখুন।
এছাড়াও শিশুর রেগে যাবার সময় তাকে গুরুত্ব কম দিতে পারেন। এজন্য সে বার বার আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইবে। যদি সে বেশি বেশি চেষ্টার পরেও কোন লাভ না হয়, নিরুপায় হয়ে রাগ কমিয়ে দেবে।
শিশুর রাগ নিয়ন্ত্রন করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নীয়ম কাজ নাও করতে পারে। এজন্য পর্যবেক্ষন করার ফলাফল আপনাকে এনে দিতে পারে নতুন ধারনা। আশাকরি আপনার শিশুর রাগ নিয়ন্ত্রনে আপনি আরো গঠনমূলক ব্যবস্থা নিবেন।
মন্তব্যসমূহ