সারা বিশ্বে ব্লগ খুবই জনপ্রিয়। আমাদের বাংলাদেশেও নানা ধরনের বাংলা ব্লগ আছে। অনেকেই শখের বশে ব্লগ লিখে জনপ্রিয়ও হয়েছেন। ব্লগ এর জন্য আপনার কিছু প্রতিভা অবশ্যই লাগবে। যেমন সেটা হতে পারে ফটোগ্রাফি- ছবি তোলার প্রতিভা, টিপস বা টেকনিকস- নিত্য নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা থেকে যা আসে(রান্না, রেসিপি, হ্যান্ডি ক্র্যাফট), লেখালেখি করার ক্ষমতা। ব্লগ হলেও সেটা একটা সাধারন ওয়েবসাইট। শুধু তাতে বিষয় আর বৈচিত্র্যময় প্রতিভার বিকাশ থাকে। ব্লগ শুধু যে অলাভজনক হবে তা কিন্তু নয়। ব্লগ হতে পারে লাভজনক একটি ওয়েবসাইট। কিভাবে ব্লগ সাইট শুরু করতে পারেন তা নিয়ে আজকের আলোচনা।
ব্লগ সাইট শুরু করতে প্রথমেই ব্লগের বিষয় নির্ধারন করুন
একটু আগে আমি যা বলছিলাম, অনেক বিষয়েই ব্লগ হতে পারে। রান্না, হ্যান্ডি ক্র্যাফট থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ডায়েরী বা নিত্য দিনের নানা বৈষম্য নিয়েও ব্লগ করা যেতে পারে। তবে যে বিষয়ই নির্ধারন করুন না কেন সবার আগে চিন্তা করুন পাঠকের আকর্ষন কোন দিকে বেশি। আপনি কাদের জন্য লিখবেন বা ব্লগিং করবেন? তারা কী করতে বা পড়তে ভালবাসে। যেমন কিছু মানুষ বাইকিং পছন্দ করেন, কেউ স্পোর্টস, আবার কেউ গান কবিতা, অভিনয় এসব। মোটামুটি সব মানুষই নানাবিধ টেক নিউজ আর প্রযুক্তির খবর রাখেন। এছাড়াও শিল্প সাহিত্য নিয়েও অনেকেই মাতামাতি করেন। আপনি নিজে যে বিষয়ে ভাল সে বিষয় নিয়ে আলাপ করাই হবে উত্তম। কারন বিষয় সম্পর্কে আপনার থাকবে গভীর ধারনা। অনেকেই ভ্রমন বিষয়ক নানান বিষয় নিয়ে ব্লগিং করেন।ব্লগ সাইটের আয় নির্ভর করে ভিজিটর আসার উপর। আপনার সাইটে যত বেশি পাঠক হবে তত বেশি আয়ের সুযোগ থাকবে। ব্লগ সাইট শুরু করার আগে তাই বিষয় নির্বাচন করা জরুরী।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
ব্লগ সাইট তৈরীর বাজেট নির্ধারন
ব্লগ সাইট যেহেতু একটা ওয়েব সাইট, এর জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমান খরচ হবেই। তবে অনেকেই হাত তুলবেন এই বলে যে আমি কেন ফ্রী ওয়েবসাইট নিবো না। আমি বলব, আপনি নিবেন না। তার পরেও যদি নিতে চান নিন। অভিজ্ঞতা হবে। পরে নিজস্ব সাইটে চলে আসতেও অসুবিধা নেই। কিন্তু সিরিয়াস কোন কাজের জন্য ফ্রী কোন কিছুই ভাল হয় না। ফ্রী ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস সেরকম করে কাষ্টমাইজড করা যায় না। ব্লগার টেমপ্লেট আছে যদিও তার পরেও এসব ব্লগ অনেকেই গুরুত্ব কম দিয়ে পড়েন। ব্যতিক্রম উদাহরণ যে নেই তা বলব না। অনেকেই আছেন সাধারন ওয়েবসাইটের চেয়েও ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস কিংবা টাম্বলার অথবা অন্যান্য ফ্রী সাইট নিয়েও অনেক জনপ্রিয়। সবই হচ্ছে চেষ্টার ফসল।
এক্ষেত্রে যদি নিজে ওয়েব সাইট করেন তবে ইচ্ছে মত ডিজাইন করিয়ে নিতে পারবেন। বাংলাদেশে অনেকেই কম খরচে ওয়েব সাইট ডিজাইন করে দেয়। তাদের কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও ওয়ার্ডপ্রেস প্রিমিয়াম থিম কিনে আপনিও একটি ভাল ওয়েব সাইট চালু করে তাতে ব্লগিং করা শুরু করতে পারেন। একটি প্রিমিয়াম থিম ৩০ ডলার থেকে ৫৯ ডলারের মধ্যেই পাওয়া যাবে। ডোমেইন আর হোষ্টিং মিলে ৩০০০টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০টাকার মধ্যেই পাওয়া যাবে। এছাড়াও যদি আপনি ওয়েবসাইট সম্পর্কে কিছুই না জানেন তবে কোন একজন ভাল অভিজ্ঞ লোক দিয়ে থীম, হোষ্টিং ডোমেইন একাউন্ট সেটাপ করাতে পারেন। এক্ষেত্রে অনেকেই ২০০০ টাকা কিংবা ৫০০০টাকাও নিয়ে থাকেন। ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে আপনিও নিজেও এই কাজগুলো আয়ত্ব করতে পারেন।
ব্লগ সাইট শুরু করুন নতুন কন্টেন্ট দিয়ে
সব কিছু ঠিক ঠাক হলে এবার আপনার লেখা প্রকাশের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। লেখা বা ছবি অথবা ভিডিও কিংবা ওডিও এর যেকোনটাই হতে পারে আপনার ব্লগিং এর মূল ম্যাটেরিয়াল। ভিডিও আজকাল বেশি দেখা হয়। এক্ষেত্রে আপনি ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। ইউটিউব একটি বিশাল সার্ভার যেখানে আপনার ভিডিও হোষ্ট করে ওয়েব সাইটে দেখাতে পারেন। কিভাবে ইউটিউভ ভিডিও ওয়েব সাইটে দেখাবেন বা পাবলিশ করবেন তা ইউটিউব ভিডিওর নিচে যে শেয়ার বাটন আছে তাতে ক্লিক করে দেখতে পারেন। তবে কখনোই অন্যের কোন লেখা বা কন্টেন্ট নিজের ব্লগে প্রকাশ করবেন না। এটা বোকামী। আপনার নামে সার্চ ইঞ্জিনে কিংবা অনলাইনে ব্ল্যাক লিষ্ট তৈরী হতে পারে। এভাবেই ব্লগ সাইট শুরু করুন।
ব্লগ সাইট থেকে আয় করা
ব্লগ সাইট করে বসে থাকার জন্য আপনি শুধু খাটবেন না। আপনি আয় ও করবেন। তার জন্য আপনাকে ব্লগ সাইট শুরু করার কিছু দিনের মধ্যেই ভাল ভাল কন্টেন্ট প্রকাশের উদ্যোগ নিতে হবে। ওয়েব সাইটের ভিজিটর বাড়াতে হবে। তখন গুগল এডসেন্স বা অন্যান্য মাধ্যম থেকে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারেন। এখন গুগল বাংলায় লেখা ওয়েবসাইটকে এডসেন্স এর জন্য এপ্রুভ করছে। এছাড়াও আপনি লোকাল ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারেন। ওয়েবসাইট থেকে আয় করা নিয়ে গুগল এ সার্চ করলে হাজার হাজার লেখা পাওয়া যায়। পড়লে বুঝতে পারবেন।
মন্তব্যসমূহ