হাতের লেখা সুন্দর হওয়াটা খুবই জরুরী। আধুনিক যুগে লেখালেখি অনেক অফিসেই হয়না। সবাই কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্যাদি আদান প্রদান করেন। কিন্তু অল্প করে হলেও সবাইকেই লিখতে হয়। এই যেমন সিগনেচার করার সময় কিছু কমেন্ট, কিংবা পরীক্ষার সময় অথবা অটোগ্রাফ দেয়ার সময়। তাছাড়াও অনেক কাজে লেখার দরকার হয়। এটা সার্বজনীন পদ্ধতি যা থেকে রেহাই নেই। তাই হাতের লেখা সুন্দর করাটা প্রয়োজনীয়। তবে খারাপ হাতের লেখা নিয়ে যারা ইতিমধ্যেই নাজেহাল অবস্থায় আছেন তাদের জন্য আমার এই লেখাটি কিছুটা হলেও কাজে লাগবে বলে আমার বিশ্বাস। এবার আসি কাজের কথায়।
কিভাবে হাতের লেখা সুন্দর করা যায়?
খুব সহজ করে বলতে গেলে হাতের লেখা সুন্দর করা মোটেও কঠিন নয়। কয়েকটা ধাপে কিছু সময় অনুশীলন করলেই এর অনেক ভাল ফল পাওয়া যাবে। নিশ্চিত। ধাপসমুহ আমি নিচে বিস্তারিত বর্ননা করছি…
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
বর্নমালা অনুশীলনঃ আপনি প্রতিটি বর্ন কিভাবে লিখবেন তা আপনাকে প্রথমেই সিলেক্ট করে নিতে হবে। আপনারা হয়ত দেখেছেন কেজি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ডট পদ্ধতি কিংবা বর্ন দেখে তার পাশে বর্ন লেখা পদ্ধতিতে হাতের লেখা অনুশীলন করানো হয়। এই পদ্ধতিটি অনেক কার্যকরি। আপনি যদি একটি বর্ন সুন্দর করে দ্রুত লিখতে পারেন তবেই আপনি সুন্দর লেখা লিখতে পারবেন। যদি বর্ন দেখে বর্ন লেখার ক্ষেত্রে অক্ষরগুলো আঁকাবাকা কিংবা খুব বেশি হেলে দুলে যায় তবে ডট পদ্ধতি আবশ্যক। হাতের লেখা সুন্দর করা নিয়মের একটা রুপ মাত্র।
সোজা করে লেখা অনুশীলনঃ লেখা যদি সোজা না হয় তবে অনেক সমস্যা। একটি লেখা দেখতে সুন্দর দেখায় তখনি যখন সব লেখাগুলো সোজা সাজানো থাকে। বর্ন সোজা করার জন্য নিয়মিত ডট পদ্ধতি অনুশীলন করতে হবে। আর লাইন সোজা করার জন্য রুলার কিংবা রুল পেপারে লিখতে হবে। ইংরেজি লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই রুল পেপারে লিখে অনুশীলন করতে হবে।
নিয়মিত লেখা অনুশীলনঃ এলোমেলো কোন কিছু নয়, চাই নিয়মিত। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে লেখা অনুশীলনের। এই কাজ খুব মনোযোগ আর ধৈর্যের সাথে করতে হবে। প্রতিদিন দশপাতা লিখলে অনেক সহায়ক হতে পারে।
স্পষ্ট অক্ষরে লেখাঃ বর্নমালা অনুশীলনের উদ্দ্যেশ্যই ছিল স্পষ্ট লেখা। যদিও অনেকেই দ্রুত লিখতে গিয়ে বর্নকে বিকৃত রুপে উপস্থাপন করেন। তাই যদি কোন বর্ন কেউ না বুঝতে পারে তবে তার প্রতি জোর দিন। যার লেখা যত দ্রুত পড়া যায় (লেখক ব্যতিত অন্য কেউ পড়তে হবে) তার লেখার মুল্য তত বেশি। তাই লেখার মুল উদ্দ্যশ্য যখন অন্যকে দিয়ে পড়ানো তখন পাঠকের কথাই মাথায় রাখবেন। স্পষ্ট করে লিখবেন।
মনোযোগী হওয়াঃ কি লিখছেন তার দিকে মনোযোগী হতে হবে। আপনি লিখছেন একটি বাক্য। কিন্তু ভুলে যাবেন না আপনি খুব দ্রুত কিছু বর্ন লিখছেন। যখনি বর্ন লিখছেন তখনি আপনাকে আবারো মনে রাখতে হবে আপনি ঠিক কোন কাঠামোর বর্নটি লিখছেন। এই খুটিনাটি বিষয় নিয়েই হচ্ছে আপনার হাতের লেখা সুন্দর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা।
সময় ব্যয় এবং টাইম ফ্রেম নির্ধারনঃ আপনি একদিনে হাতের লেখা পাল্টাবেন? পারবেন না। এটা এতটাই সহজ কিছু নয়। এর জন্য আপনাকে একটি টাইম ফ্রেম বেঁধে দিতে হবে। আমি সবসময় নতুনদেরকে একমাস সময় নিতে বলি। এবং প্রতিদিন একঘন্টা। যদি কেউ এর কম সময় দেন এবং পিছিয়ে আসেন তবে তিনি সত্যিই চেষ্টা করেন নি। অনেকের ক্ষেত্রে আর আগেই হয়, কন্তু বেশিরভাগ মানুষ এর চেয়ে বেশি সময় নিয়েছেন।
বেশি করে পড়ুন এবং দ্রুত পড়ুনঃ আপনি যখন লিখবেন তখন পড়াটাও জরুরী। তবে নিজের লেখাটাই পড়ুন একটু বেশি। দ্রুত পড়ুন। অন্যকে দিয়েও পড়ান। যদি বেশি করে পড়েন তবে নিজের কোথায় ভুল হচ্ছে তা বুঝতে পারবেন। দ্রুত পড়তে গেলে বুঝতে পারবেন আপনি কোথায় অস্পষ্ট করে লিখেছেন। সহকর্মী কিংবা বন্ধুকে দিয়ে পড়ান। দেখুন তারা দ্রুত পড়তে পারে কি না। যদি পারে তবেই বুঝবেন উন্নতি হচ্ছে।
কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলুনঃ লেখায় ভুল হয়, এই ভুলের মাত্রা কমানোর চেষ্টা করুন। কাটাকাটি করা মানুষের অনেক পুরনো অভ্যাস। তাই একটানে কেটে আবার লিখুন। কাগজের একপাশে খালি জায়গা রেখে লেখা শুরু করুন। এই খালি যায়গা হচ্ছে মার্জিন। বাম ডান এবং উপর নিচে যথেষ্ট জায়গা রাখুন। অভার রাইটিং কখনোই করবেন না। এটা বিরক্তিকর। ভাল কলমে লিখুন। খারাপ কলমে দ্রুত লেখা যায় না।
আরো অনেক বিষয় আছে যা লিখতে গেলে আপনার নিজে থেকে চলে আসবে। একসময় আপনাকে সুন্দর এবং দ্রুত লেখা দিয়ে কেউ পিছে টানতে পারবে না।
আজই শুরু করুন আপনার অনুশীলন। এবং হাতের লেখাকে দিন নতুন এক রুপ। হাতের লেখা সুন্দর করা হয়ে উঠুক আপনার তপস্যার এক বিশেষ দিক।
মন্তব্যসমূহ