যখন শিশু জন্মায় তখন থেকেই তার প্রচন্ড রকমের আগ্রহ তৈরী হয় চারপাশে অবস্থানরত সব কিছুর প্রতি। এই সময়ে তার ক্ষমতা অনেক কম থাকে। সে চাইলেই মাথা ঘুরিয়ে চারপাশ দেখতে পারে না। যতটুকু তার চোখের সামনে নিয়ে আসা হয় কিংবা দৃষ্টি সীমার ভেতরের যেদিকে তাকে দেখিয়ে দেয়া হয় ততটুকুই সে দেখে। এভাবে দেখতে দেখতেই সে শেখে। একটার পর একটা ইট দিয়ে যেমন একটা বড় ভবন তৈরী করা হয়, তেমনি একটু একটু করে একটা শিশুর বুদ্ধির বিকাশ ঘটতে থাকে। কিভাবে শিশুর বুদ্ধির বিকাশ এ আপনি আপনি অন্যতম সহায়ক হবেন তা আজ জানাচ্ছি। বাবা মা দু’জনেই এই ভুমিকায় শিশুকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। তবে যদি বাবা মা ছাড়াও অন্য কেউ কোন শিশুর দ্বায়িত্বে থাকেন তাঁর ক্ষেত্রেও এই ধারনাগুলো প্রযোজ্য হবে।
শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
পরিবার হচ্ছে প্রথম স্কুল, একে প্রাতিষ্ঠানিক বলুন আর অপ্রাতিষ্ঠানিক বলুন এখান থেকেই শিক্ষা দীক্ষার শুরুটা হয়। যে পরিবার যতটা কম শিক্ষিত সেখান থেকে শিশুদের শিখতে বিলম্ব হওয়াই স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা যায়। পারিবারিক আচার আচরণ কিংবা অভ্যাস এসব কিছুই প্রাথমিক স্তম্ভ গড়ে দেয়। এর জন্য বাবা মা আর আত্মীয়স্বজনদের কাছে থাকার হারের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। আপনি পরিবারের সদস্যদের সাথে শিশুকে কিভাবে আচরণ করতে হবে তা বলে দিতে পারেন। প্রায়োগীক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৃদ্ধি করতে পারেন শিশুর বোধ শক্তি, বুদ্ধি এবং এভাবেই শিশুর সুস্থ্য মানসিক বিকাশ ঘটবে।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
শিশুর মানসিক বিকাশে খেলাধুলা
শিশুর মানসিক বিকাশে খেলাধুলা হচ্ছে অনেক ভূমিকা নেয়। খেলায় সবচেয়ে বেশি ইন্টারএ্যাকশন হয়। অর্থাৎ এখানে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ সমঝোতা বেশি পরিমানে পরিলক্ষিত হয়। যাদের সাথে শিশু খেলবে তাদের কাছ থেকে সে অনেক কিছুই শিখে ফেলে। কিভাবে অন্যের সাথে রেগে যেতে হয় কিংবা ক্ষীপ্ত হয়ে অনেক সময় মারামারি ঝগড়া এসবও খেলার মাঠ থেকে শেখার সম্ভাবনা থাকে। তবে সবই নির্ভর করছে খেলার সাথীরা কেমন তার উপর। আমাদের দেশের খেলার মাঠে ঝগড় বিবাদ লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি শিশুকে নিজের সাথে রেখে কিংবা তার সাথে থেকে অন্য সবার সাথে খেলাধুলা করতে সহায়তা দিতে পারেন।
শিশুর মানসিক বিকাশে করনীয় কিছু পদক্ষেপ
পড়ালেখা, খেলাধুলা কিংবা আচার আচরণ এসব শেখানোর পাশাপাশি শিশুকে পারিপার্শ্বিক ঘটনা কিংবা অবস্থার বর্ননা দিতে পারেন। প্রকৃতির ব্যাখ্যা নিয়মিত পেতে থাকলে তার প্রকৃতির সাথেও সখ্যতা তৈরী হবে।
বাগান করা কিংবা পোশা প্রানীর সেবা যত্ম নেয়ার মধ্যেও শিশুকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারেন। এক্ষেত্রে আগে অবশ্যই তাকে মূল ধারনা দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে কেন কোন কাজটা করা হয়। পোশা প্রানীর সাথে কিভাবে আচরণ করতে হয় সেদিকে আপনি নজর দিতে পারেন।
ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করা
বর্তমানে আমাদের দেশের শিশুরা তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি মোবাইল ফোনে কিংবা ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট এ আশক্ত হচ্ছে। এর কারন অনেক। তবে সবচেয়ে বেশি যৌক্তিক কারণ হচ্ছে আমরা বড়রা শিশুদের খুব ছোট বয়স থেকে সময় না দিয়ে হয়ত নিজেরা তাদের সামনে এসব ডিভাইস নিয়ে বেশি সময় কাটাই। অথবা তাদের বিরক্ত করা থেকে বাঁচতে তাদের কোমল হাতে ফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস তুলে দেই। এর ফলাফল খুবই খারাপ হতে চলেছে। অধিকাংশ শিশুরা বোকা হয়ে বেড়ে উঠছে। চোখের নানান রোগে ভুগছে। অপুষ্টির শিকার হচ্ছে- কারন খেতে চায় না। আপনি যদি কিছুটা চেষ্টা করেন তবে অবশ্যই শিশুদের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
শিশুর মেধা বিকাশে করণীয় হিসেবে বই দিতে পারেন
শিশু সাহিত্য শিশুদের মনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে সহায়ক হয়। মন ভাল শিশুদের মেধা অনেক প্রখর হয়। এদের মনোযোগ বাড়ে। যেকোন কাজ কিংবা পড়াশোনা করার সময় এরাই বেশি সিরিয়াস থাকে। আপনি শিশুকে অবশ্যই বই পড়তে উৎসাহিত করতে পারেন। খেলার ছলে পড়ানোর চেষ্টা করেও দেখতে পারেন। বাসার কাজের মধ্যে কিংবা সে যে কাজে বেশি খুশি হয় তার মধ্যেই পড়ালেখার উপকরণ মিশ্রণ করে দিন।
শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার বলে কিছু নেই, কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। শাকসব্জি, ফলমূল, আমিষ ভিটামিন সব রকমের খাবার তাকে খেতে উৎসাহি করতে হবে। শিশুরা খেতে পছন্দ করে না, আপনার প্রধান কাজ হবে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো। কোন কারনে শিশু যদি খাবার কম খায়, তাকে খাবারের সাইজ, আকৃতি, কিংবা নানান স্বাদের খাবারের পরিবেশনে আরো বেশি মনোযোগী করতে হবে। রোগা শিশুর মন এবং দূরন্তপনায় উৎসাহ থাকে না।
মন্তব্যসমূহ