ফেসবুক হ্যাক হওয়া নিয়ে অনেক দিন থেকেই গুজব আর গল্প শুনছি। দেয়ালে দেয়ালে কতজনে যে লিখেছেন, ‘আমার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকড’। যা কিছু অনৈতিক পোষ্ট দেখছেন তা হ্যাক হবার কারনে হয়েছে। এছাড়াও অনেক নোটিশ। যার বেশির ভাগই হচ্ছে ফেসবুক হ্যাক হওয়া নিয়ে। এজন্যই কিভাবে ফেসবুক হ্যাক হয় তা নিয়ে আজ কিছু ধারনা দিতে চাচ্ছি। অবশ্যই মনে রাখবেন। ফেসবুক হ্যাক হওয়া মানে ফেসবুক ইউজার একাউন্ট/ প্রোফাইল/ অ্যাপ হ্যাক হবার কথা বুঝানো হচ্ছে। বিস্তারিত জানার জন্য সাথেই থাকুন।
কিভাবে ফেসবুক হ্যাক হয়? অথবা ফেসবুক ইউজার একাউন্ট হ্যাক হতে পারে যেভাবে
ফেসবুক ইউজার একাউন্ট যখন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় তখনই বুঝতে হবে হ্যাক হয়েছে। কিংবা হ্যাক হতে পারে। ফেসবুক হ্যাক হবার কয়েকটি লক্ষন দেখুন।প্রাথমিকভাবে কিভাবে ফেসবুক হ্যাক হয় তার ধারনা পাওয়া যাবে-
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
১) ফেসবুক হ্যাক হলে প্রোফাইলের দেয়ালে যা তা প্রকাশ হয়ে যেতে পারে।
২) ফেসবুক হ্যাক হবার সাথে সাথে অন্যান্য ফ্রেন্ড বা ফ্রেন্ড লিষ্টে থাকা যে কেউ খুব অদ্ভুত কিছু বার্তা পেতে পারেন। মেসেজ যখন তখন কাউকে হুমকি দিয়েও হতে পারে।
৩) লগিন করতে না পারা
৪) প্রোফাইল ছবি বা নাম বদলে যাওয়া
৫) বিভিন্ন ধরনের লিংক প্রকাশিত হওয়া সহ আরো অনেক কিছু হতে পারে
কিভাবে ফেসবুক হ্যাক হয় তার কিছু পদ্ধতি উল্যেখ করা দরকার
হ্যাকিং টুলস এর ব্যাবহার। হ্যাকারদের অনেক টুলস থাকে। তাদের টুলসগুলো খুবই অদ্ভুত রকমের হয়। কিছু টুলস আমরা নিজেরাই নিজেদের ডিভাইসে ইনস্টল করে ফেলি। এখান থেকেই ফেসবুক হ্যাক হয়। কোন ফাইল আমাদের ডিভাইসে থাকলে হয়ত গুরুত্ব দেই না। আর সেই ফাইলগুলোর যে কোনোটি হতে পারে, হ্যাক টুলস। হ্যাক টুলস শুধু মাত্র ফেইসবুক নয়, সব কিছুই হাতিয়ে নিতে পারে। আপনার মূল্যবান তথ্য পাসওয়ার্ড। এর সব কিছুই চলে যেতে পারে হ্যাকারের হাতে।
সাবধানতা হিসেবে আপনি একটি হালনাগাদকৃত এন্টিভাইরাস ইউজ করুন। বা উইন্ডোজ ডিফেন্ডার এর সাহায্য নিতে পারেন। নিয়মিত স্ক্যানিং করে দেখুন। কখনোই কোন সাধারন ফাইলকেও কম গুরুত্ব দেয়া ঠিক নয়। ডিলিট করে দিন। নজরে না এলেও স্ক্যান আপনাকে সাহায্য করবে। টেম্পোরারী ফাইল নামে যে ফোল্ডার তা ফাঁকা রাখুন।
পড়তে পারেন কিভাবে ফেইসবুক ফ্রেন্ড সংখ্যা বাড়াবেন?
সেশন কুঁকি চুরি করা, ফেসবুক হ্যাক করা ‘র আরেকটি পদ্ধতি মাত্র
আমরা অনেকেই কোন ব্রাউজারে একবার লগিন করলে তা আর লগ আউট করি না। পরবর্তীকালের জন্য ওভাবেই রেখে দেই। পরে যখন আবার প্রবেশ করি তখন আর লগিন লাগে না। মানে পাসওয়ার্ড দিতে হয় না। এই পুরো ব্যাপারটি মেইনটেইন হয় কুঁকি পদ্ধতিতে। কুঁকি হচ্ছে ইউজার ক্লায়েন্টের সাথে সার্ভারের রিলেশন্স। জমাকৃত তথ্য সার্ভার পড়তে পারে। সে অনুযায়ী পারমিশন দেয়। যখন দেখা যায় যে সার্ভারের লগিন তথ্যের সাথে কুঁকির তথ্য মিলে যাচ্ছে তখন গ্রহন করে নেয়। যতক্ষন পর্যন্ত লগিন করা থাকবেন ততক্ষন কুঁকি এক্টিভ থাকে। লগ আউট করলেই কুঁকি ডেষ্ট্রয় হয়।
এবার আসুন জেনে নেই এই কুঁকি কিভাবে চুরি হতে পারে। এর জন্য কেউ যদি আপনার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। একই ওয়াইফাই বা ল্যান কানেকশন হলেও করা যেতে পারে। আপনার ডিভাইস বা ক্লায়েন্ট ব্যবহার করার সময় চুরি করতে পারে। অথবা কোন টুলস ব্যবহার করে করতে পারে।
সাবধানতা হিসেবে, অপরিচিত ওয়াইফাই ব্যবহার না করা। যে কোন ওয়েবসাইট ব্যবহারের সাথে সাথে লগ আউট করে বের হয়ে যাওয়া। পাসওয়ার্ড অন্তত পনের দিনে একবার পরিবর্তন করা। ফেসবুক লগ ইন করা কিংবা লগ আউট করায় আরো সাবধানী হতে হবে। আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
ফোন নাম্বার কিংবা ইমেইল আইডি চুরি করেও ফেসবুক হ্যাক হতে পারে
আপনার ফোন নাম্বার যদি একবার হাতে নিতে পারে তবে ফোন ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে হ্যাক করে ফেলতে পারে। ইমেইল এর ক্ষেত্রে একই অবস্থা। যদিও এখন আর আগের দিন নেই। আপনাকে কোন লিংক পাঠালেন। আর আপনি সেই লিংক এ গিয়ে নিজের পাসওয়ার্ড দিয়ে ঢুকে পড়লেন। তার পরেও এই অনেক পুরনো পদ্ধতিতে অনেক হ্যাকার কাজ করেন।
মনে রাখবেন, যে কোন লিংক ব্রাউজ করলেও আপনি নিরাপদ। শুধু সেই লিংকে গিয়ে ইউজার নেম বা ফেসবুক নাম আর পাসওয়ার্ড দিবেন না। ব্যাস। আপনার কিছুই হবে না।
আরো জানুন কিভাবে ফেইসবুক ফেইক আইডি চিনবেন?
ফেসবুক অ্যাপস ইনস্টল করেও আপনি হ্যাক হয়ে থাকতে পারেন
ফেসবুক অ্যাপ ইউজ করেন নি এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। যখন ই কোন অ্যাপ ইনস্টল করা হয় তখন সেই অ্যাপ আপনার কিছু তথ্য চায়। অনুমতি চায়। আপনি যদি সেসব অনুমতি না বুঝে দিয়ে থাকেন তবে হ্যাক হতে পারেন। মানে আপনার ওয়ালে ঐ অ্যাপ যে কোন পোষ্ট করতে পারে। এমন সব অ্যাপ এড়িয়ে চলুন।
ফেসবুক হ্যাকিং এর অনেক নতুন পদ্ধতি বের হচ্ছে। তাতে কান না দিয়ে নিজের পদ্ধতি গুলো ধরে থাকুন। হ্যাকার চাইলেই সব পারে না। তবে আজকাল হ্যাকাররা কিছু ভিন্ন টেকনিক ইউজ করছে। যেমন এক সাথে ১০ হাজার একাউন্ট থেকে রিপোর্ট করে জানাচ্ছে যে এই একাউন্ট নকল বা ডুপ্লিকেট। তখন সেই একাউন্ট ব্লক করে দেয়া হয়। এসব কিছু ঘটনার সাথে পরিচিত থাকতে পারেন। কিছু করার নেই।
আপনার ফেসবুক ব্যবহার নিরাপদ হোক এই কামনায়।
মন্তব্যসমূহ