আমাদের দেশে মাছ চাষ অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার কারন হিসেবে বলা যায় মাছ চাষ আধুনীকায়ন হয়েছে অনেক বেশি। মাছের গতানুগতিক প্রক্রিয়া পদ্ধতির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনীক যুগের উপযোগী কিছু মৎস্য চাষ প্রকল্প। এসব করার জন্য খুব বেশি যে শিক্ষিত হওয়া দরকার তাও কিন্তু নয়। তবে মোটামুটি শিক্ষিত হলে আধুনীক মাছ চাষ পদ্ধতি শিখতে সহজ হয়। আজ আমরা সংক্ষিপ্ত ভাবে দেশের আধুনীক মাছ চাষ নিয়ে কিছু আলোচনা করব। স্বাবলম্বী হতে মাছ চাষ পদ্ধতিগুলো দেখুন।
মাছ চাষঃ পদ্ধতি সমূহ
অনেক দিন আগে মাছ চাষ করার জন্য পুকুর, খাঁচায় কিংবা ধান ক্ষেতে মাছ চাষ ছিলো একমাত্র পদ্ধতি। দিনের আধুনীকায়নে এখন এগুলোকে বলা হয়ে থাকে সনাতন পদ্ধতি। এখন মাছ চাষ চলে এসেছে পুরোপুরি বানিজ্যিক ধাঁচে আর উদ্যোক্তারা নিজেদের মত করেই সাজিয়ে নিচ্ছেন আধুনীকায়নের এই মহা পরিবর্তন। এদের মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি পদ্ধতির কথা আলোচনা করা যাক।
কিভাবে ইনফো এ লিখুন লেখক হয়ে সবাইকে কিছু তথ্য জানান
লেখালেখি করে আপনি জিততে পারেন আকর্ষনীয় পুরষ্কার! বিস্তারিত দেখুন
১। বায়োফ্লক পদ্ধতি
২। বটম ক্লীন পদ্ধতি বা রেসওয়ে পদ্ধতি
৩। আর এ এস পদ্ধতি
৪। একুয়াফনিক পদ্ধতি
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা
বায়োফ্লক পদ্ধতি হয়ত এর মধ্যেই আপনি শুনে ফেলেছেন। এটি বর্তমানে খুব চলছে। ট্রেন্ডিং বলা যায়। এর ফলে অধিক ঘনত্বে অল্প জায়গায় কম সময়ে অধিক পরিমান মাছ চাষ করা যায়। বিশ্বের নানান দেশ এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন।
এই পদ্ধতির মূল তত্ব হচ্ছে, ব্যক্টেরিয়া এবং মাছের মল মিলে ফ্লক তৈরী করে যা আবার মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে মাছের খাবার অনেক কম লাগে। তবে এই পদ্ধতিতে নিবিড় পরিচর্যার কথা মাথায় রাখতে হয়। নিয়মিত পানিতে বায়ু সঞ্চালনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয়। এয়ার পাম্প লাগানোর দরকার হয়। বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প বিদ্যুৎ হিসেবে সোলার বা জেনারেটর এর দরকার পড়ে।
বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে লাভ বেশি হয়। যে খরচ পড়ে তার মধ্যে এককালীন খরচ বেশি। যেমন এয়ার পাম্প এবং ট্যাংক বানানোর খরচ। এছাড়াও মাছের পোনা কেনা এবং খাবার প্রয়োজন মত কিনে শুরু করা যায়। অভিজ্ঞদের মতামত হলো- প্রথমে খুব কম সংখ্যক মাছ চাষ শুরু করলে দ্রুত প্রশিক্ষিত হয়ে ওঠা যায়। এতে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়।
বটম ক্লীন মাছ চাষ পদ্ধতি বা রেসওয়ে পদ্ধতি
বটম ক্লীন বলতে বুঝানো হচ্ছে- তলানী পরিষ্কার করন পদ্ধতি। কিন্তু এর পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন বৈজ্ঞানিক বার্তা দেয়। তলানীর বর্জ্য পাম্পিং পদ্ধতিতে ক্লীন করার পাশাপাশি ট্যাংক বা পুকুরে এক ধরনের স্রোতের সৃষ্টি করা হয়। এই স্রোতের মধ্যেই মাছ অধিক ঘনত্বের ভেতরে অনেক কম খাবার(এমন কি শুধু ঘাস) খেয়ে বেড়ে উঠতে পারে।
এখন এই বটম ক্লীন পদ্ধতি খরচ কম হবার কারনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর ফলন অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে কম নয়। অনেকেই অনেক বড় বড় প্রজেক্ট চালু করছেন বটম ক্লীন পদ্ধতিতে।
আপনি যদি বটম ক্লীন মাছ চাষ পদ্ধতিতে শুরু করতে চান তাহলে ছোট আকারে হলেও একটা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিন। তাতে খুব দ্রুত সুফল পাবেন।
আর এ এস (RAS) মাছ চাষ পদ্ধতি
এই পদ্ধতি অনেক দিনের পুরনো। এটিও একটি বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন। এই পদ্ধতিতে পানির প্রসেস এবং নিয়ন্ত্রণ খরচ নেহায়েত কম নয়। তবে এর সবচেয়ে অসুবিধা হলো এর শুরুতেই ব্যয় বা লগ্নি খরচ অনেক বেশি। অনেক টাকা না থাকলে এই পদ্ধতি শুরু করা মুশকিল। আজকাল এই পদ্ধতিতে কেউ আর আগ্রহী নয়। সবাই বায়োফ্লক কিংবা বটম ক্লীন এর দিকে ঝুঁকছেন।
একুয়াফনিক মাছ চাষ পদ্ধতি (Aquaphonic Fish Firming)
একুয়াফনিক মাছ চাষে প্রধান উদ্দ্যেশ্য থাকে শাক সবজি চাষ। সমন্বিত ব্যবস্থায় মাছ এবং শাক সবজি চাষ করার মাধ্যমে এই কালচার গড়ে উঠে। মাছ এর বিষ্ঠা থেকে এমোনিয়া তৈরী হয়। যা শাক সবজি চাষের জন্য ফিল্টার করে সেই পানি গাছে সরবরাহ করা হয়। অনেকেই আবার ভিন্ন কিছু পদ্ধতি কাষ্টমাইজেশন করে এই চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। যেমন নিচের চিত্রে সরাসরি মাছ এবং সবজি চাষ হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ